বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের যোগান অব্যাহত রাখা হবে। সুষ্ঠুভাবে লোড ব্যবস্থাপনা করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী আজ অনলাইনে সেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেচ মৌসুমে এ চাহিদা আরো বাড়ে। চাহিদা যতই বাড়ুক নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা মতো প্রাকৃতিক গ্যাস এবং জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস হতে সেচ মৌসুম শুরু হয় যা ৩১ মে পর্যন্ত চালু থাকে। উল্লেখ্য, গত সেচ মৌসুমে মে মাসে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৯৭ মেগাওয়াট। চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। শুধু সেচের জন্য ২০২১ সালে বিদ্যুৎ লেগেছে ২ হাজার ৩১৫ মেগাওয়াট যা ২০২২ সালের জন্য প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ হাজার ৩৭৫ মেগাওয়াট।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চলতি সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল সরবরাহ বৃদ্ধি করা এবং চালু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহে অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ ও বিপিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সমন্বয় করে জ্বালানি পরিবহন নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), পেট্রোবাংলা ও বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রসমূহে জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং কয়লার সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সভায় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এছাড়া সেচ পাম্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য গ্রিড উপকেন্দ্র, সঞ্চালন লাইন, বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্রসমূহ সংরক্ষণ ও মেরামত কাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করা, ওভারলোডেড সাবস্টেশনসমূহ ও সঞ্চালন লাইন আপগ্রেডেশনের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা, সেচ মৌসুমে লাইভ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ তদারকির জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন করা ইত্যাদি বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। আলোচনাকালে বিপিসি, পেট্রোবাংলা, জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিসি তাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরে।

ভার্চুয়াল এই আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় অন্যান্যের মাঝে বিদ্যুৎ সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর চেয়ারম্যান মোহাঃ সেলিম উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন।